রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৮ অপরাহ্ন
Reading Time: 2 minutes
মাসুদ রানা রাব্বানী, রাজশাহী:
রাজশাহীতে কেটে পিস হিসেবে ইলিশ মাছ বিক্রি করা শুরু হয়েছে। ফলে ক্রেতারা চাইলে নিজের চাহিদা মতো ইলিশের পিস কিনতে পারছেন। এক কেজি সাইজের একটি ইলিশের এক টুকরো (আনুমানিক ১০০ গ্রাম) কেনা যাচ্ছে ২০০ টাকায়।
এমন উদ্যোগে ক্রেতারা খুশি হলেও বিক্রেতারা বলছেন, সর্বনিম্ন ২৫০ গ্রামের নিচে ইলিশ কেনাবেচায় লোকসান হবে তাদের। অন্তত ২৫০ গ্রাম ইলিশ কিনলে মাছের প্রায় সব অংশ থেকে ভাগ পাবেন ক্রেতা।
বৃহস্পতিবার (১০ অক্টোবর) দুপুর ১টার দিকে রাজশাহী নগরীর সাহেববাজারের মাছপট্টিতে ইলিশ মাছ কেটে বিক্রির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের নেতারা। এ সময় তারা ব্যবসায়ীদের ইলিশ মাছ কেটে বিক্রির জন্য অনুরোধ জানান।
জানা গেছে, রাজশাহীর বাজারে ৬০০ গ্রাম থেকে শুরু করে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে এক হাজার থেকে দুই হাজার ২০০ টাকায়। চড়া দামের কারণে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষদের পক্ষে আস্ত ইলিশ কেনা সম্ভব হচ্ছে না। ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় সুস্বাদু মাছটির স্বাদ থেকে বঞ্চিত হচ্ছেন অনেকে। তাদের জন্যই নেওয়া হয়েছে ব্যতিক্রমী এই উদ্যোগ।
একজন বিক্রেতা জানান, আজ থেকে রাজশাহীর বাজারে ইলিশ মাছ কেটে বিক্রি করা শুরু হয়েছে। এটি ভালো উদ্যােগ। বড় ইলিশ বিক্রি হচ্ছে দুই হাজার টাকা কেজি দরে। আর প্রতি ২৫০ গ্রাম ইলিশ মাছের পিস বিক্রি হচ্ছে ৫০০ টাকায়।
তিনি আরও জানান, দুপুর দেড়টা পর্যন্ত চারটি বড় সাইজের মাছ কেটে বিক্রি করেছেন তিনি। ২৫০ গ্রাম ওজনের পিস নিলে মাথা, লেজসহ বিভিন্ন অংশ পাওয়া যাচ্ছে। এই ওজনের পিস বেচাবিক্রি হলে ক্রেতা ও বিক্রেতা উভয়ই লাভবান হবেন।
সাইফুল নামের এক ক্রেতা বলেন, এখন সব শ্রেণির মানুষ অল্প হলেও ইলিশ মাছ কিনে খেতে পারবেন। এমন উদ্যোগ আরও আগে নেওয়া উচিত ছিল। যারা এই উদ্যোগ নিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানাই। সেই সঙ্গে কোনো বিক্রেতা পিস আকারে কেটে ইলিশ বিক্রি করতে না চাইলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানাই।
তিনি বলেন, ‘দেশে এত ইলিশ, তারপরও মানুষ এটি কিনে খেতে পারে না। বিষয়টি নিয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত মানুষের মনে একটা চাপা কষ্ট ছিল। নতুন এই উদ্যোগের ফলে গরিব মানুষ এখন ইলিশের স্বাদ পাবেন।
আবার অনেক ক্রেতারা ব্যাতিক্রম মন্তব্য করে বলেন, ইলিশ মাছ চাষে পরিচর্যা, লেবার খরচ, অন্যান্য মাছের মতো ফিড খাওয়াতে হয়না। এমনকি পুকুরের মতো নদীর বাৎসরিক লিজের টাকাও দিতে হয়না। তাহলে ইলিশের দাম এত হবে কেন? তারা সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের দৃষ্টি আকর্ষন করে বলেন, ইলিশের মূল্য বাড়তি হওয়ার একমাত্র কারন সিন্ডিকেট। এই সিন্ডিকেট ভাংলে ইলিশের দাম ১০০০/১২০০ শত টাকা এবং এর চেয়েও কমবে। তাছাড়া ইলিশ মাছ যদি সরাসরি জেলেদের কাছ থেকে ক্রয় করা যেত তাহলে তাহলে ইলিশের দাম কেজি প্রতি ৭০০/৮০০ টাকায় পাওয়া যেত। যাহা সকল শ্রেণী পেশার মানুষের ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে থাকতো বলেও বলেও মন্তব্য করেন ক্রেতারা।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে রাজশাহী ব্যবসায়ী সমন্বয় পরিষদের সাধারণ সম্পাদক সেকেন্দার আলী বলেন, আজ থেকে রাজশাহীর সাহেব বাজারের ক্রেতারা কাটা ইলিশ মাছ কিনতে পারবেন। সামর্থ্য অনুযায়ী যার যতটুকু প্রয়োজন ততটুুকু মাছ কিনতে পারবেন। ১০০, ২০০ বা ২৫০ গ্রাম ইলিশও কিনতে পারবেন।
‘দাম চড়া হওয়ায় গরীব মানুষ বছরে এক টুকরা ইলিশও খেতে পারেন না। তাদের কথা চিন্তা করে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেজি হিসেবে মাছের যে দাম ধরা হবে, কেটে একই দামে তা বিক্রি করবেন ব্যবসায়ীরা। যদি কোনো বিক্রেতা কাটা ইলিশ মাছ বিক্রি করতে অস্বীকার করেন, বিষয়টি মৎস্য ব্যবসায়ী সমিতির নেতাদের জানাবেন। তারা মাছ ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে ব্যবস্থা নেবেন।